নিরেন দাস: স্বপ্ন সেটা নয়, যেটা মানুষ ঘুমিয়ে দেখে। স্বপ্ন সেটাই, যেটা পূরণের প্রত্যাশা মানুষকে ঘুমতে দেয় না। সেই স্বপ্নই দেখিয়ে গিয়েছিলেন ভারতের একাদশ রাষ্ট্রপতি ড.আবুল পাকির জয়নুল আবেদিন আবদুল কালাম।
দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এলেও সমাজের জন্য কিছু করে যাওয়াই ছিল তাঁর স্বপ্ন। বিশ্বজুড়ে তাঁর পরিচিতি ‘মিসাইল ম্যান অব ইন্ডিয়া। জীবনে বারবার হেরেছেন কিন্তু জিতেছেন তার পরেরবারই। কোট টাই পরাও ধরেছেন রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর। দুর্নীতি যার পিছু পিছু এলেও টলাতে পারেনি একবিন্দুর জন্য। ২০০২ সালে কালাম যখন রাষ্ট্রপতি, তখন রমজান মাস।
রাষ্ট্রপতির জন্য নিয়মিত রেওয়াজ ছিল, তিনি ইফতার পার্টির আয়োজন করবেন। আবদুল কালাম তাঁর সচিব পি এম নায়ারের কাছে জানতে চাইলেন, একটা ইফতার পার্টির আয়োজনে কত খরচ হয়? পি এম নায়ার তাঁকে বললেন, প্রায় ২২ লাখ টাকা। কালাম তাঁকে বললেন, ‘কয়েকটা নির্দিষ্ট অনাথ আশ্রমে এই অর্থে খাদ্য, পোশাক ও কম্বল কিনে দান করতে হবে।’
রাষ্ট্রপতি ভবনের অফিসারদের সমন্বয়ে গঠিত একটি টিম অনাথ আশ্রম বাছাইয়ের দায়িত্ব পেয়েছিল। অনাথ আশ্রম বাছাইয়ের পরে কালাম নায়ারকে ডেকে তাঁর হাতে এক লাখ টাকার একটি চেক দিয়ে বলেন, তিনি তাঁর ব্যক্তিগত সঞ্চয় থেকে কিছু অর্থ দান করছেন। কিন্তু এ তথ্য কারও কাছে প্রকাশ করা যাবে না।
পিএম নায়ার পরে বলেছিলেন, আমি তো অবাক। বললাম, ‘স্যার, আমি এখনই বাইরে যাব এবং সবাইকে বলব। কারণ, মানুষের জানা উচিত, এখানে এমন একজন মানুষ রয়েছেন, যে অর্থ তাঁর খরচ করা উচিত, শুধু সেটাই তিনি দান করেননি, তিনি সেই সঙ্গে নিজের অর্থও বিলিয়েছেন।’
ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে তিনি যেদিন বেরিয়ে এসেছিলেন সেদিন তাঁর সঙ্গে ছিল শুধু ব্যক্তিগত কাপড়চোপড় আর বই।
গুণীজনদের বাণী দেড়ি হলেও তার বাস্তবতা নিজ চোখে দেখা যায়—-সাংবাদিক নিরেন দাস
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।